মারাত্মক বন্যা সতর্কতায় মৌলভীবাজার এর সাত উপজেলার ৩৭ ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার মানুষ জন। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ত্রিপুরা হতে ধেয়ে আশা পানিতে মৌলভীবাজারের অনেকাংশ প্লাবিত হয়েছে। এতে জলবদ্ধ হয়ে পরেছে লক্ষাধিক মানুষ সহ গৃহপালিত পশুপাখি। শহরে ক্রমাগত জলধারা বেড়েই চলেছে ফলে শঙ্কা করা হচ্ছে পুরো শহর তলিয়ে যেতে পারে। এলাকার স্কুল, কলেজ, বাসা বাড়ি, দোকান, ধর্মীয় উপাসনালয়, কলকারখানা সহ বিভিন্ন স্থাপনা ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
এলাকার স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ইতোমধ্যে শহরের রক্ষা বাধ ভেঙে শহরের দিকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আশংকা করা হচ্ছে পুরো মৌলভীবাজার শহর পানির তলে ডুবে যেতে পারে। এলাকার জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পরেছে এবং ইতোমধ্যে মাইকিং করে সতর্ক বার্তা ঘোষণা করা হয়েছে পুরো শহরতলীতে।
মারাত্মক বন্যা সতর্কতা মৌলভীবাজার বন্যার শঙ্কায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ
শহরের অনেক খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে পানি ঢুকে খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। শঙ্কা করা হচ্ছে খাবার ও নিরাপদ পানির অভাব দেখা দিতে পারে পুরো শহর জুড়ে। মৌলভীবাজারের সাত উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৯৫ হাজার জনের মতো হবে বলে জানতে পেরেছেন সময় ব্লগের কর্মীরা। এখন অব্দি ৪৭ ইউনিয়ন পৌরসভা সহ ২১২ টি গ্রাম বন্যায় কবলিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে সাধারণ মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ হতে ২৮৫ মেট্রিক টন চাল ও সাত উপজেলায় ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ইতোমধ্যে। ২৫ টি সজ্জিত মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছেন পরিস্থিতি সামাল দিতে। ইতোমধ্যে জেলার ৪৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সকল বয়সের প্রায় ৬ হাজার ৬৫ জন মানুষ।
মৌলভীবাজার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ সিরাজী জানান, বন্যার কারণে প্রায় ১০৬৮ টি পুকুর ও খামার প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেখানে আনুমানিক মাছের ক্ষতির পরিমাণ ধারণা করা হচ্ছে ৩২৪ মেট্রিক টন এর কাছাকাছি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার মতো। তবে খামার প্রকল্প ও সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ এখন অব্দি দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১১ লাখের মতো।
এছাড়াও মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, আগত বন্যার কবলে জেলার ৩৯ হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে আমান ধান ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এছাড়াও জেলার রাস্তা ঘাঁট, বসত বাড়ি, দোকান পাট, সরকারি প্রতিষ্ঠান সহ ক্ষতির পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছেই। তবে সমগ্র জেলা জুড়ে ঘোষণার মাধ্যমে দোকানীদের মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে ও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় পণ্য সহায়তা পাঠিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।