সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে সাময়িক সময়ের অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে আগত পানি। সময়ের সাথে সাথে যেন এ বন্যা মারণ বানে পরিণত হচ্ছে। ধীরে ধীরে এ বন্যার পরিস্থিতি একেবারে অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ যেন এক ধ্বংস লীলা চলছে, ভাঙছে সড়ক, বাড়িঘর, মসজিদ, মন্দির, ও সরকারী প্রতিষ্ঠান। বাদ যাচ্ছে না একটি গাছপালাও, মাইলের পর মাইল মানুষের হাহাকার ও কান্না। নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে উঠে শহরতলীর স্থাপনা অব্দি ডুবিয়ে দিয়েছে।
জেলার সাথে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরছে আস্তে আস্তে। বন্ধ হয়ে গেছে সিলেটের সাথে অন্যান্য জেলার রেল যোগাযোগ। এছাড়াও সড়ক বিচ্ছিন্নতার কারণে ব্যাঘাত ঘটছে অন্যান্য যান চলাচল।
সিলেট বন্যার কারণ দেওয়া হল
সিলেটে অতীতে বড় বড় দীঘি, পুকুর, বিল সহ গভীর নদী ছিল যার কারণে ঢলের পানি সহজেই সেখানে পতিত হতো। ফলে মুশলধারে বৃষ্টির মধ্যেও বন্যার আশঙ্কা থাকতো না। কিন্তু বর্তমানে তেমন নিষ্কাশন বেবস্থা না থাকায় ঢলের পানি ও ভারত থেকে আসা পানি কোথাও স্থান না পাওয়ার কারণে বন্যা হচ্ছে। সিলেটে অতীতে বড় বড় দীঘি থাকার কারণে সিলেট সাধারণত দীঘির শহর নামেই খ্যাত ছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক কালে এসব জলা ভুমি ভরাট করে বানানো হয়েছে বসতবাড়ি সহ বিভিন্ন স্থাপনা। এতেই বিপাকে পরেছে আজকের মানব সভ্যতা।
নদীর তলদেশ ভরাট
সিলেটের বন্যার অন্যতম কারণ হল গভীর নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া। ফলে পানির ধারণক্ষমতা কমে গেছে তাই ঢলের পানি ও ভারত থেকে আসা পানি ধারণ করতে না পারাটা একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এসব নদীগুলো পুনরায় খনন করলে পানির ধারণক্ষমতা বাড়লে বন্যার আশঙ্কা হ্রাস করা সম্ভব।
শহরের জলাশয় দখল ও ভরাট করা
প্রভাবশালীদের দ্বারা নগরের বিভিন্ন স্থানের পুকুর, নালা, হাওর-বাওর, নদীর কিনারা ইত্যাদি ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ভারত থেকে আসা পানি লোকালয়ের সকল ঘরবাড়ি সহ সবকিছু লন্ড ভণ্ড করে দিয়ে যাচ্ছে। এতে লাখ মানুষ তার সর্বস্ব হারাচ্ছে ও তাদের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে নারকীয়।
ভারত থেকে আসা এই পানিতে সিলেট এর হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে, যা অপূরণীয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এলাকাবাসীরা মনে করেন তাদের এই সর্বস্ব হারানোর পিছে একমাত্র দায়ী হচ্ছেন ভারত।
উজানে অতিবৃষ্টির প্রভাব
বর্ষাকালে সিলেট সবসময়ই উত্তাল থাকে, ফলে বৃষ্টির পানিতে চারিদিকে পানি থৈ থৈ করতে থাকে। এটিও একটি কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সিলেট বর্ষাকালের সময় সীমা সাধারণত অনেকটাই লম্বা হয়ে থাকে সবসময়। এই জন্যই মূলত এমন বিপাকে পড়তে হয়।
সময়.ব্লগ এর সাথে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।